ছোট্ট শামুক আর বিশাল গ্যালাক্সি: ক্ষুদ্রতার মাঝে বিশালতার গল্প
আপনি দু-কদম হাঁটতেই কিছু শামুকের খোলস আপনার পায়ের নিচে গুঁড়ো হয়ে গেল। হয়তো আপনি খেয়ালই করলেন না। অথচ এই ছোট্ট শামুক আপনাকে মহাবিশ্বের বিশাল গ্যালাক্সির কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
একটা গ্যালাক্সি কত বড় হতে পারে, জানেন? যদি আমরা আমাদের গ্যালাক্সি "মিল্কিওয়ে"-কে একটি ফুটবলের বলের সাথে তুলনা করি, তাহলে পৃথিবী হবে সেই ফুটবলের উপর একটি ধূলিকণা। শুধু ভাবুন! কিন্তু এই বিশালতার মাঝে আপনি কী? আপনি একেবারেই ক্ষুদ্র এক বিন্দু, যা খালি চোখে দেখাও সম্ভব নয়। এই বিশালতার সামনে আমাদের অস্তিত্ব যেন একেবারেই তুচ্ছ।
মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই ভিন্ন, কিন্তু বেশিরভাগেরই আকৃতি এক অদ্ভুতভাবে পরিচিত। মজার ব্যাপার হলো, মহাবিশ্বে থাকা গ্যালাক্সিগুলোর আকৃতি অনেকটা শামুকের খোলসের মতো পেঁচানো। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই আকৃতি প্রকৃতির একটি গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে, যাকে বলা হয় Golden Ratio। এই অনুপাত প্রকৃতির অসংখ্য সৃষ্টিতে দেখা যায়—শামুকের খোলস থেকে শুরু করে গাছের ডালপালা, সূর্যমুখীর বীজ, এমনকি ঝড়ের পেঁচানো ঘূর্ণিও এই নিয়ম মেনে চলে।
আপনি হয়তো বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে ছুটছেন—মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন, কিংবা সাফল্যের শিখরে ওঠার স্বপ্ন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন, পায়ের নিচে গুঁড়িয়ে যাওয়া সেই শামুকটিকে কি ভালো করে দেখেছেন? তার খোলসের আকৃতি কি আপনাকে স্তম্ভিত করেছে? তার গায়ে আঁকা প্রকৃতির নিখুঁত নকশা কি আপনাকে থমকে দিয়েছে? আমরা বড় কিছু খুঁজতে গিয়ে ক্ষুদ্র সৌন্দর্যগুলোর দিকে তাকাতেই ভুলে যাই।
জীবনের বিশালতা খুঁজতে গিয়ে যেন ছোট ছোট সৌন্দর্যগুলোকে ভুলে না যাই। কারণ প্রকৃতি তার গল্প বলে ক্ষুদ্রের মধ্যেই। সেই গল্পে থাকে বিশালতার অনুপ্রেরণা। ক্ষুদ্র আর বিশাল—এ দুইয়ের মিশ্রণেই তো জীবন।
তাই পরেরবার যখন আপনি পথে হাঁটবেন, একটু থামুন। পায়ের নিচে পড়ে থাকা একটি শামুকের খোলসকে সময় দিন। তার সৌন্দর্য দেখুন। কারণ এই ক্ষুদ্র শামুকটিই আপনাকে শেখাবে, বিশালতার আসল অর্থ।
কোন মন্তব্য নেই: